বেশ কিছুদিন ধরে তনিমা অল্প অল্প করে টাকা জমাতে শুরু করেছে। বছর ঘুরলে পর একটা দোলনা কিনবে সে। যে আসছে তনিমার কোল আলো করে, তার জন্যে ।
প্রতিমাসে কাপড়ের পুঁটলিটা বার করে টাকা রাখে, পরম মমতায় হাত বোলায়, নাড়ে চাড়ে। সেটা কতটা ফুলেফেঁপে উঠেছে তা দেখে একটা আয়েসী হাসি হাসে। তারপর ভালো করে বেঁধে সেটা আবার তুলে রাখে আলমারিতে।
বছর শেষ হতে তখনও মাস তিনেক বাকি।একদিন হঠাৎ...সকালে উঠে তনিমা দেখে আলমারি টা খোলা।তাড়াতাড়ি গিয়ে আগে সে পুঁটলিটার খোঁজ করে।কিন্তু না! তার এতদিনের তিল তিল করে জমানো টাকা সে দেখতে পায় না। কেবল চোখে পড়ে মেঝেতে পরে থাকা কাপড়টি।হতভম্ব হয়ে দেয়ালে ঠেসান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে...এই সকাল তাকে মনে করিয়ে দেয় বেশ কিছুদিন আগের একটা সকালের কথা। তনিমার ভরাট গর্ভ চিড়ে কারা যেন সেদিন ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার সন্তান। নিজের ব্যর্থতায় ডাক্তার বাবু দুঃখ প্রকাশ করে তনিমার মাথায় হাত রেখে সান্ত্বনা দেন।
সম্বিত ফিরলে সচকিত হয়ে তনিমা হাত রাখে তার পেটে।আপন মনেই অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে না!