Season of mists and mellow fruitfulness,
Close bosom-friend of the maturing sun;
Conspiring with him how to load and bless
With fruit the vines that round the thatch-eves run;
To bend with apples the moss'd cottage-trees,
And fill all fruit with ripeness to the core;
To swell the gourd, and plump the hazel shells
With a sweet kernel; to set budding more,
And still more, later flowers for the bees,
Until they think warm days will never cease,
For summer has o'er-brimm'd their clammy cells.
‘ওড টু অটাম’ এক চিরকালীন কবিতা, যাকে হেমন্তের ঘেরাটোপে বেঁধে রাখা আমাদের সীমাবদ্ধতা মাত্র। হ্যাঁ, এই কবিতা হেমন্ত ঋতুতেই লেখা। ঠিক যেমন, এক সদ্য জন্মানো শিশু মায়ের স্তনবৃন্তকেই খুঁজে নেয় নিজের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য। কিন্তু তৃষ্ণা কী বিশাল একটা শব্দ আর পিপাসা আরও বড়ো একটা ক্যানভাস। সেখানে মায়ের স্তনবৃন্ত তো ছোটো! কিন্তু সেই ছোটো পরিসরেই মুক্তি পায় এই বিরাট ক্যানভাস। একইভাবে কীটসের ওডস টু অটামে আমরা দেখতে পাই একটা ঋতুর প্রতি বন্দনা শুধু নয়, মানুষের আবহমান শস্যচেতনা, শস্যচেতনার যে পেটেন্ট মানুষের আত্মায় আঁকা তারই এক প্রতিবিম্ব আমরা যেন দেখতে পাই মাঠেঘাটে জলধারায়। কীটস এই কবিতায় কেবলমাত্র পূর্ণ শস্যের সেই গোলার দিকে ইঙ্গিত করেন নি। ইঙ্গিত করেছেন মানুষের সেই তৃপ্তির দিকে। যে তৃপ্তি মানুষকে হাঁটিয়ে নিয়ে আসে। হাঁটিয়ে নিয়ে আসে ষ্টেশন থেকে ঘরের দিকে, ক্ষুধা থেকে নিদ্রার দিকে অশান্তি থেকে শান্তির দিকে ঈর্ষা থেকে প্রেমের দিকে তুষারপাত থেকে কম্বলের উষ্ণতার দিকে। সেই পদচারণার মধ্যে যেন জড়িয়ে আছে সভ্যতার অনন্তকাল হেঁটে যাওয়া। এই মানুষ একদিন পাথর হাতে হেঁটে যেতো। গুহায় গুহায় আঁকত নানানরকম ছবি সেই মানুষই একদিন হাতে তুলে নিল কর্ষণের যন্ত্র, হাল, লাঙল।
অহল্যার গানে যেমন আমরা শুনেছি তেভাগা আন্দোলনের সময়। সেই হালই যেন একদিন মাটির বুক চিরে ফলিয়ে তুলল ফসল। সেই ফসল কোথাও ধান, কোথাও গম, কোথাও বাজরা, কোথাও বা অন্যকিছু কিন্তু সব পথ এসে যে পথে শেষে মিলে যায় সেই পথ হচ্ছে উৎপাদন। সেই পথ হচ্ছে ফসলের উৎপন্ন হওয়া। আসলে উৎপাদন অর্থনীতির তত্ত্বে কেবলমাত্র থিয়োরি। যেমন মানুষ স্ট্যাটিসটিক্সের বিচারে কেবল সংখ্যা। চাষীর কাছে উৎপাদন কোনও থিয়োরি নয়। চাষীর কাছে উৎপাদন সেই জীবন্ত ঝর্ণা যা একই সঙ্গে তৃপ্ত করে আবার ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সেই অর্কিড যা ওষুধ হওয়ার আগে রঙে রঙে পাগল করে দেয়। সেই রঙে রঙে পাগল করে দেওয়া যৌবনের একান্তে যেন দাঁড়িয়ে থাকে অটাম, আমাদের হেমন্ত।
আমরা প্রতিটা মানুষও কি অটাম হয়ে উঠি না? আমাদের যৌবন যেন বসন্ত। এই বসন্তে আমাদের নিজেদের উঠতির দিকে, নিজেদের বিহ্বলতার দিকে নিজেদের নাগরদোলায় নীচ থেকে ওপরে সেই ঘূর্ণায়মান পরিক্রমণের দিকে আমাদের নজর থাকে। কিন্তু সময় এক অভূতপূর্ব অলাতচক্র। যে অলাতচক্রে আগুন আর আলো মিশে যায় পরস্পরের মধ্যে পরস্পরের হাত ধরে খেলা করে। সেই অলাতচক্রের এপারেই দঁড়িয়ে থাকে আমাদের প্রত্যেকের হেমন্ত। যা একই সঙ্গে প্রৌঢ়ত্ব ও পূর্ণতা। বৃষ্টিপাত ও নদীধারা। গর্ভ এবং গর্ভসঞ্চার। সেই প্রৌঢ়ত্বে আমরাই যেন আমাদের কাছে পূর্ণ হয়ে উঠি। আমাদের পূর্ণতা আমাদের শেকড়ের কাছে, ঘাসের ভেতর জমে থাকা শিশিরবিন্দুর কাছে। কারণ আমরা নিজেরা তখন আমাদের চাহিদার সীমান্ত থেকে অনেকটা সরে এসে পৌঁছে গেছি আমাদের ফিরিয়ে দেওয়ার সীমান্তে। গ্রহীতা থেকে দাতা হওয়ার এই যে চক্রবত পরিক্রমণ এই পরিক্রমাই ওড টু অটামের মূল সুর। এখানে আমরা গ্রহীতা থেকে দাতা হই। এখানে আমরা ক্ষুধা থেকে ক্ষুধা নিবারণ হই। এখানে আমরা কবিতার রচনাকার থেকে নিজেরাই যেন কবিতা হয়ে উঠি। যে সূর্যের আলো দুপুর বারোটার পর থেকেই ত্বকে জ্বালার মতো এসে বিন্দু বিন্দু ছুঁচ ফোটায় সেই সূর্যের আলোই যেন বিকেলবেলা আমাদের নিয়ে যায় এক অভূতপূর্ব রূপকথার দেশে। যেখানে আমাদের চারদিকে ঘিরে থাকে সোনালি ফসল আর আমরা ভাষা নির্বিশেষে দেশ নির্বিশেষে গুনগুণ করে উঠতে পারি, ‘সূর্য ডোবার পালা আসে যদি আসুক বেশ তো।/ গোধূলির রঙে হবে এ ধরণী স্বপ্নের দেশ তো”। স্বপ্নের দেশ তো সেই দেশ যেখানে অগণিত শস্য চারদিকে। আমরা আমাদের অস্থি মজ্জায় অনুভব করি, ‘আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বন্টন।’ অটাম আমাদের সেই ফসলের সুষম বন্টনের দিকে, জীবনের সুষম বন্টনের দিকে, দিনরাত্রির সুষম বন্টনের দিকে এমনকি ভালবাসার সুষম বন্টনের দিকে নিয়ে যায়। একটা আলো জ্বেলে হাজার বছরের অন্ধকারকে দূর করে দেয়। একটা রসঘন ফল হাতে তুলে দিয়ে মানুষের শতাব্দী ব্যাপী তৃষ্ণাকে বলে, ‘ধৈর্য ধরো ধৈর্য ধরো, তোমার ক্ষুধানিবৃত্ত করতে প্রকৃতি তার সর্বস্ব দিয়ে কাজ করছে। প্রকৃতি তার স্বপ্নে তোমাকে রেখেছে তুমি তার যাপনে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখো।’