ডায়াবেটিস মোকাবিলায় ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম শুধু ডায়াবেটিস নয়, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, দেহের অতিরিক্ত মেদ কমানো ও আরও বিভিন্ন অসুবিধার মোকাবিলায় অন্যতম হাতিয়ার। শরীরকে সুস্থ, কর্মঠ, রাখতে গেলে তার জন্য সঠিক ভাবে পরিশ্রম করতে হবে। সজীব ও সবল রাখতে হবে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে। ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ (Exercise) হল-সঠিক নির্দেশ মেনে ব্যায়াম বিভিন্ন রকমের। হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, অ্যারোবিক ব্যায়াম, মাল্টিজিমে ব্যায়াম, যোগব্যায়াম ও আরও অনেক কিছু। এবার আমরা ব্যায়াম কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে জেনে নেই।
হাঁটা : হাঁটা ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে একটি সুন্দর ব্যায়াম। আজকাল গাড়ি ঘোড়ার সংখ্যাও অনেক বেড়ে গেছে। বেশী দূর হাঁটা তেমন হয় না। এমনকি ছোটখাটো দূরত্বে মানুষ বাসে, ট্রামে, রিক্সায় চড়ে। ডায়াবেটিস রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ মতো প্রতিদিন নির্দিষ্ট পথ হাঁটিতে হবে।
সাইকেল চালানো : সাইকেল চালানো একধরনের অ্যারোবিক এক্সারসাইজ। অর্থাৎ শারীরিক পরিশ্রমের সাথে সাথে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম হয়। এতে হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুস দুই ভালো থাকে। সম্ভব হলে সপ্তাহে তিন-চারদিন আধঘণ্টা করে সাইকেল চালানো উচিত।
সাঁতার কাটা : সাঁতার কাটা একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যায়াম—একথা আমরা অনেকেই জানি। সাঁতারে শরীরের মোটামুটি সব অঙ্গ নড়াচড়া করে। যাঁদের হৃদরোগ ধরা পড়েছে ও ডায়াবেটিস আছে তাঁরা ডাক্তারে পরামর্শ ছাড়া সাঁতার কাটবেন না।
মাল্টিজিমে ব্যায়াম : মাল্টিজিম একটি আধুনিক ব্যায়াম। শহরের বিভিন্ন সভ্রান্ত অঞ্চলে ‘হেল্থ ক্লাব' গড়ে উঠেছে। মাল্টিজিম বা হেলথ ক্লাবগুলির এক অন্যতম উপকরণ। মাল্টিজিমের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন অংশের ব্যায়ামের জন্য আলাদা আলাদা যান্ত্র লাগানো থাকে। যেমন—সাইড টুইস্টিং, ওয়েট নিয়ে সাইড বেন্ডিং, জাম্পিং, স্কিপিং, ওয়াকার, ভাইব্রেটর, রোলার স্পট রানিং, সিট আপ আরও বহু কিছু মেদ কমাতে ও বিভিন্ন অঙ্গ সবল রাখতে এসব খুবই কার্যকরী।
যোগব্যায়াম : সাধারণত শরীরকে সুস্থ রাখা, রোগাক্রান্ত শরীরকে রোগমুক্ত করা ও পরমাত্মার সাথে অন্তর আত্মার মিলনের মাধ্যম হিসাবে প্রাচীন ভারতীয় ঋষি মনীষীরা যোগব্যায়াম অভ্যাসের প্রচলন করেন। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে ও মোকাবিলা করতে যোগাসন খুবই কার্যকরী। নিম্নলিখিত যোগভ্যাস আমাদের যোগব্যায়াম বই থেকে দেখে নিয়ে অভ্যাস করুন। গোমুখাসন, শবাসন, হলাসন, উড্ডীয়ান, উস্থিত পদ্মাসন।
খালি হাতে ব্যায়াম : আসন প্রাণায়াম যাই করুন না কেন সবার আগে দেহের নমনীয়তা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে হবে। এই নমনীয়তা বাড়ানোর জন্য যোগাসন শুরুর আগে কয়েকটি খালি হাতে ব্যায়াম করে নেওয়া দরকার। এই ব্যায়ামের ফলে দেহ প্রসারিত হয়। দেহের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।